المجزرة - Massacre

المجزرة مجازٌ ميتٌ يأكل أصدقائي، يأكلهم بلا ملحٍ، كانوا شعراءَ، وأصبحوا مراسلين مع حدود، كانوا متعبين وأصبحوا متعبين جداً، "يعبرون الجسر في الصبح خفافاً "، ويموتون خارج التغطية، إنني أراهم بالمناظير الليلية، وأتتبعُ حرارة أجسادهم في الظلام، ها هم يهربون منها إليها، مستسلمين لهذا المساج الهائل، المجزرة أمهم الحقيقية، أما الإبادة الجماعية فهي مجردُ قصيدةٍ كلاسيكيةٍ يكتبها جنرالاتٌ مثقفون أحيلوا إلى التقاعد، الإبادة الجماعية لا تليق بأصدقائي، فهي عملٌ جماعي منظم، والأعمال الجماعية المنظمة تذكرهم باليسار الذي خذلهم.
 
المجزرةُ تصحو باكراً، تحمّمُ أصدقائي بالماء البارد والدم، تغسلُ ملابسهم الداخلية وتعدُ لهم الخبز والشاي، ثم تعلمهم قليلاً من الصيد، المجزرة أحنُّ على أصدقائي من الإعلان العالمي لحقوق الانسان، فتحتْ لهم الباب حين غُلِّقتْ الأبواب، ونادتهم بأسمائهم حين كانت نشراتُ الأخبار تبحث عن عدد الضحايا، المجزرة هي الوحيدةُ التي منحتهم اللجوء بغض النظر عن خلفياتهم، لم يهمها وضعهم الاقتصادي، لم يهمها إنْ كانوا مثقفين أو شعراء، إنها تنظر إلى الأشياء من زاوية محايدة، لها نفس ملامحهم الميتة، وأسماءُ زوجاتهم الأرامل، تمرُّ مثلهم على الأرياف والضواحي، وتظهرُ فجأة مثلهم في الأخبار العاجلة، المجزرة تشبه أصدقائي، لكنها دائماً تسبقهم إلى القرى النائية ومدارس الأطفال.
 
المجزرة مجازٌ ميتٌ يخرجُ من التلفزيون، ويأكل أصدقائي دون رشة ملح واحدة.

© Ghayath Almadhoun
Audioproduktion: Literaturwerkstatt / Haus für Poesie, 2016

গণহত্যা

হত্যা শব্দটা নিজেই মরে গেছে। সেই এখন গিলতে বসেছে আমার সমস্ত বন্ধুদের। আলোনা চিবিয়ে খাচ্ছে। বন্ধুরা আমার কবি ছিল একদা। এখন তাদের রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডারস নামে চেনে সবাই। মনমরা কবি ছিল তারা। এখন শ্রান্ত অবসন্ন মানুষের দলা। দিনান্তে তারা সাঁকো পার হয় দ্রুত পায়ে হেঁটে। দুনিয়াজোড়া নেটওয়ার্কের নাগালের বাইরে মরে যাচ্ছে চুপচাপ। আমি তাদের দেখব বলে চোখে পরে নিয়েছি নাইট ভিশন গগলস। অন্ধকারে হাতড়াই তাদের ওম। ওই যে— পড়িমরি ছুটছে— হায়! যেদিকে ওঁত পেতে আছে থাবা, সেদিকেই কেন জোরে ছুটে যাচ্ছে ওরা! কেন মাথা পেতে দিচ্ছে এই হাঁড়িকাঠে! গণহত্যা-নরসংহার-হত্যালীলা-নরমেধ সবকটা শব্দই অহেতুক গম্ভীর। এগুলো দিয়ে আমার বন্ধুদের দশা ঠিকঠাক বলা যাবে না। এই সব শব্দ কোনো পেনসানখোর কর্নেল ছন্দমিলিয়ে লিখুকগে— ইজিচেয়ারে চা খেতে খেতে মহাকাব্য রচনা করুক চাইলে। আমার বন্ধুরা গণহত্যার শিকার না। আমার বন্ধুদের সে থিকথিকে ভিড়ে হন্যে হয়ে খুঁজেছে মায়ের মতো। কোথা থেকে না কোথা থেকে ফিঁড়ে এনে কচুকাটা করেছে। এমনিতে গণহত্যা সুপরিকল্পিত সাংগঠনিক কাজ। পরিকল্পনা সংগঠন এসমস্ত কথা উঠলেই বন্ধুদের মনে পড়ে যাবে বিদ্রোহের কথা। বিদ্রোহের স্বপ্নই তো এই হাল করেছে বন্ধুদের।

গণহত্যা সক্কালসক্কাল উঠে আমার বন্ধুদের রক্তের মধ্যে ঠান্ডা জল মিশিয়ে ভালো করে স্নান করায়। বাসি জাঙিয়া কেচেকুচে সাফ করে। চা-পাউরুটি খাওয়ায় যত্ন করে। তারপর শিকারের গল্প বলে। শেখায় শিকারের খুঁটিনাটি। ওহে মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক ঘোষণাপত্র! তোমার থেকে গণহত্যা আমার বন্ধুদের প্রতি অনেক বেশি দয়ালু। যখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সবাই, গণহত্যা বন্ধুদের জন্য কোল পেতে দিয়েছে। বন্ধুদের প্রত্যেককে নামে চেনে সে। আর সাংবাদিকরা হাতড়ায় সংখ্যা— তেরোজন পঁচিশজন হাজার দশহাজার। কাছে টেনে নেবার আগে সেই একমাত্র, একবারও জিজ্ঞেস করেনি— কী তোমাদের কুলপরিচয়, কে কে আছে বাড়িতে, কী কর, রোজগার কত? কিচ্ছু এসে যায় না তার— কবি না বুদ্ধিজীবী। গণহত্যা খুবই নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে চলে। কেমন দেখতে তাকে?
ঠিক যেমন দেখায় মৃত বন্ধুদের চোখমুখ।
ঠিক যে নামে ডাকলে সাড়া দেয় হতভাগ্য স্বামীহারা তরুনীরা—
গণহত্যাকে সেই নামে ডাকো তুমি।
বন্ধুদের মতোই পার করে যায় গ্রাম-পাড়া-জমি-জিরেত। বন্ধুদের মতোই আচমকা ভেসে ওঠে ব্রেকিং নিউজ হয়ে। গণহত্যার হাবভাব বন্ধুদের মতোই—খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ।
কেবল হতদরিদ্র গ্রামের যে স্কুলে বন্ধুদের পৌঁছবার কথা ছিল, অনেক আগেই সে এসে পৌঁছয়।

গণহত্যা মরে হেজে যাওয়া একটা রূপক— যার কোনো ছবি নেই আর— মাথামুড়ো নেই— টিভির পর্দা থেকে বেরিয়ে এসে আমার বন্ধুদের মাথা চিবোচ্ছে। নুন ছাড়া। এক কণা লবন নেই তার।

Translated from English by Manos Chakraborty